শীতে-প্রাকৃতিক-উপায়ে-ত্বকের-যত্ন

শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র না হলে এর ছাপ পড়বে ত্বকের ওপর৷ তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। দিনে কমপক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি খাওয়া আবশ্যক৷ ডাবের পানি, ফলের রসও পান করতে পারেন৷

দীর্ঘ সময় গরমের হাঁসফাঁসানি কাটিয়ে দেশে শীতের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে। অল্প সময়ের এই শীতে শুষ্ক বাতাসের তীব্রতা বাড়ে। হিমেল এ বাতাস মানুষের শরীরে বেশি প্রভাব ফেলে ত্বকে।

খসখসে হয়ে ওঠে ত্বক। ঠোঁট, হাত ও পায়ের গোড়ালিও ফেটে যায় অনেকের। তাই এ সময় ত্বকের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। তবে এ যত্ন যদি প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা নানা উপকরণ দিয়ে করা যায়, তাহলে তো আর কোনো কথাই থাকে না। শীতকালে ত্বকের পরিচর্যায় যে উপাদানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-

জলপাই তেল

সব ধরনের ত্বকের যত্নেই জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল খুবই উপকারী। অলিভ অয়েল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে পা থেকে গলা পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া এর সঙ্গে মধু ও চিনি মিশিয়ে ঘন ক্রিমের মতো প্যাক তৈরি করে স্ক্রাবের কাজ করা যায়। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকের মৃত কোষ উঠে যায়। এ ছাড়া কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট ফাটা বন্ধ হয়ে যায়।শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

মধু

রূপচর্যার কাজে মধু অপরিহার্য। মধু সব সময় সবভাবেই ব্যবহার করা য়ায়। তবে শীতকালে এর ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায় মধু। মধু নিমিষেই ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। ত্বকের যেকোনো সমস্যায় মধু ওষুধের মতো করে৷

পাকা কলা

ত্বক মসৃণ ও উজ্বল করতে পাকা কলার জুড়ি মেলা ভার। বেসন, দুধ ও কলা‍ ব্লেন্ড করে মুখে, গলায়, হাতে ও পায়ে লাগাতে পারেন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান৷ এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বক পাবে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা, হয়ে উঠবে নরম ও কোমল৷শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

নারিকেল তেল

মুখ ও শরীরের ত্বকের পাশাপাশি গোড়ালি, হাঁটু, কনুইয়েরও বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন, বিশেষ করে শীতকালে৷ না হলে এ জায়গাগুলো রুক্ষ ও কালো হয়ে যায়৷ এর যত্নে ব্যবহার করতে পারেন নারিকেল তেল। এ জন্য প্রথমে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর তেল আলতো করে ওই জায়গাগুলোতে লাগিয়ে নিন। রাতের বেলা এ কাজ করাই ভালো।শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

কমলালেবু

কমলালেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি ত্বকের বলিরেখা রোধ করে৷ কমলালেবুর খোসা, সরবাটা, ময়দা বা বেসনের প্রলেপের ব্যবহার রূপটান হিসেবে বহুদিন প্রচলিত৷ এই শীতে যত কমলালেবু খাবেন, তার খোসা ফেলবেন না৷ রোদে শুকিয়ে সংগ্রহ করে রেখে দিন। পরে গুঁড়া করে ব্যবহার করতে পারবেন৷শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

গোলাপজল ও গ্লিসারিন

শীতকালে গোলাপজল ও গ্লিসারিন একটি বড় ভূমিকা রাখে ত্বকের যত্নে। এ দুটি একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালে ত্বক সুন্দর থাকে, থাকে মসৃণ। গ্লিসারিন যেকোনো ত্বকে খুব দ্রুততার সঙ্গে যেমন কাজ করে তেমনি ত্বক রাখে মোলায়েম ও প্রাণবন্ত। ত্বকে থাকা নানা সমস্যাও দূর করে। মিশ্রণটি রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করাই ভালো।শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন

তবে এসবের পরও মূল কথা হলো, শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র না হলে এর ছাপ পড়বে ত্বকের ওপর৷ তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। দিনে কমপক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি খাওয়া আবশ্যক৷ ডাবের পানি, ফলের রসও পান করতে পারেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *